January 16, 2025, 10:02 pm

সংবাদ শিরোনাম
শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ শিবচরে খানকান্দি দৈয়দ আশরাফ আলী উচ্চ-বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ টেকনাফ ২ বিজিবি”র অভিযানে আটক-৬ লক্ষ্মীপুরে তিন পুলিশ সদস্যকে পেটালেন সিএনজি চালকরা মধুপুরে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত বেনাপোলে বিজিপি বিএসএফ সেক্টর কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হারিয়ে যাওয়া মায়ের খোঁজে দিশেহারা সন্তানরা ভিসা জটিলতায় বেনাপোল বন্দরে পরিবহন ব্যাবসার ধ্বস তেজগাঁও থানা ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি প্রজেক্টরে ভেসে উঠায় স্থানীয় জনতার প্রতিবাদ

বাংলাদেশ সংস্কৃতি জগতের তারকাদের চোখে দৈনিক ইত্তেফাক

ডিটেকটিভ বিনোদন ডেস্কঃ

ছবি- সংগৃহীত

দৈনিক ‘ইত্তেফাক’-এর ৬৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। এ উপলক্ষে প্রতিবছর যখনই একাধিক শিল্পী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের স্মৃতিচারণ আমরা সংগ্রহ করতে যাই, তখনই তারা নানান বর্ণিল স্মৃতির কথা মনে করিয়ে দেন। কারণ, এ দৈনিকের বিভিন্ন অনুষঙ্গের সঙ্গে সম্পৃক্ত হননি এমন তারকা-কলাকুশলী কম। দৈনিক ‘ইত্তেফাক’ তারকাদের কাছে তাই এক ভালোবাসার ঘর। যে ঘরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ঠাঁই নিয়েছে পরম নির্ভরতায়। ‘ইত্তেফাক’-এর জন্মদিনে তাই কজন শিল্পী-কলাকুশলীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন গ্রন্থিত হলো সেই আস্থার স্মারক স্বরূপ। ‘ইত্তেফাক’-এর সকল পাঠকের প্রতি রইল আমাদের কৃতজ্ঞতা। গ্রন্থনা করেছেন তানভীর তারেক ও মোস্তাফিজ মিঠু।

সংস্কৃতি জগতেরও আর্কাইভ ‘ইত্তেফাক’  

চিত্রনায়িকা মৌসুমী

আমরা যারা পত্রিকা বা চিঠির যুগের, তাদের কাছে ‘ইত্তেফাক’ অনেক স্মৃতিবিজড়িত পত্রিকা। শুধু তাই নয়, মুক্তিযুদ্ধের আগে থেকে দেশের জন্য এই পত্রিকার যে ভূমিকা, তা নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আর্কাইভ ‘ইত্তেফাক’। শুধু তাই নয় আমাদের সংস্কৃতি জগতেরও আর্কাইভ ‘ইত্তেফাক’। আমাদের কাছে এই পত্রিকার জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ সিনেমার পাতা। ‘ইত্তেফাক’-এর পাতাজুড়ে সিনেমার বিজ্ঞাপন, সিনেমা নিয়ে কথা, বিনোদন জগতের বিভিন্ন খবর—স্বাভাবিকভাবেই এগুলো আকর্ষণ করত।ক্যারিয়ারের শুরুর পরেও গণমাধ্যমের দিক থেকে যে সাপোর্ট প্রয়োজন, সেটি ‘ইত্তেফাক’-এর কাছে পেয়েছি। এটি আনন্দের একটি বিষয়, ‘ইত্তেফাক’ নতুনদের নিয়ে সব সময় কাজ করে। আর সবচেয়ে বড়ো বিষয়, পত্রিকাটির মধ্যে আছে গণমাধ্যমের দায়িত্ববোধ। অনেক গণমাধ্যমকেই এখন দেখি হিট বাড়ানোর জন্য সংবাদে অতিরিক্ত চমক রাখে। এটি আসলে দায়িত্ববোধের পরিচয় নয়। ‘ইত্তেফাক’-এর সেই জায়গাটা এখনো অবিচল রয়েছে। অনেক বছর পেরিয়ে এগোচ্ছে প্রাণের এই গণমাধ্যমটি। শুভেচ্ছা পত্রিকাটির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে।

‘ইত্তেফাক’ প্রকৃত অর্থেই সমাজের দর্পণ

গণমাধ্যমব্যক্তিত্ব হানিফ সংকেত:

গণমাধ্যমের এই বহুল চর্চিত সময়ে নিজেদের সম্পাদকীয় নীতি থেকে শুরু করে পত্রিকার বিন্যাস সবকিছুতে দেশের প্রতি কমিটমেন্ট ধরে রাখাটা একটা অগ্নি পরীক্ষা। কারণ, এখন অনেকেই পাঠকের চাহিদা অনুযায়ী পত্রিকা সাজানোর চেষ্টা করে। তাতে আদর্শচ্যুতির আশঙ্কা থাকে। কিন্তু দৈনিক বা গণমাধ্যমের উচিত পাঠক কে সুগঠিত করা। সেই কাজটিই করে আসছে দৈনিক ‘ইত্তেফাক’। যার ওপর পাঠকরা নির্ভর করতে পারে।আর একটা বিষয়ে ‘ইত্তেফাক’-এর বিশেষভাবে ধন্য বাদ প্রাপ্য। তাহলো দৈনিকটিতে কোনো কিছুতেই অতি বাড়াবাড়ি নেই।পৃথিবীর বড়ো বড়ো গণমাধ্যম সিএনএন, আল জাজিরা, বিবিসির জন্মদিন কবে? কবে তারা জন্মোত্সব পালন করেছে, আমরা কেউ বলতে পারব না। কিন্তু আমাদের দেশে এটি আলাদা উত্সবে পরিণত হয়েছে। আমি এটি পালনের বিপক্ষে নই। কিন্তু বাড়াবাড়ির বিপক্ষে। ‘ইত্তেফাক’ সে বাড়াবাড়ি কখনোই করেনি। এছাড়া আমি সব সময় বলি, আমাদের কিছু কিছু প্রবাদ বাক্যের ভুলের কথা। যেমন, আমরা বলি, ‘পানির অপর নাম জীবন।’ না, এটা ঠিক নয়। বাক্যটি হবে, ‘বিশুদ্ধ পানির অপর নাম জীবন।’ আমরা বলি, ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।’ এটা হবে, ‘সুস্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।’ তেমনি আমরা বলি, ‘দৈনিক পত্রিকা হলো সমাজের দর্পণ।’ এটাও ঠিক না। সকল দৈনিকই সমাজের দর্পণ হতে পারে না। সঠিক বাক্যটা হবে, ‘মান সম্পন্ন দৈনিকই হলো সমাজের দর্পণ।’ ‘ইত্তেফাক’ আমাদের কাছে তাই প্রকৃত অর্থেই সমাজের দর্পণ।

সিনেমার খবর মানেই ইত্তেফাক

চিত্রনায়ক শাকিব খান:‘ইত্তেফাক’-এ সঙ্গে এদেশের মানুষের সম্পর্কটা বেশ পুরোনো। পরিবারের মতো। সিনেমাপ্রেমীদের কাছে ‘ইত্তেফাক’ ছিল সবার আগে। ছাত্রজীবন ও ক্যারিয়ারের শুরুর সময়টা আরো বেশি করে মনে পড়ে। ‘ইত্তেফাক’কে পাতাজুড়ে সিনেমার খবর ও বিজ্ঞাপন ছাপা হতো। সিনেমার খবর একটি পত্রিকা যে কতটা যত্ন করে ছাপা হয়, সেটির উদাহরণ এই পত্রিকা। আমার ক্যারিয়ারে অনেক স্মৃতি ‘ইত্তেফাক’কে ঘিরে। শুরু থেকে আজ পর্যন্ত এই পত্রিকার কোনো সংবাদের কারণে বিব্রত হতে হয়নি। কখনো অভিযোগ করার মতোও কিছু ঘটেনি। আরেকটি বিষয় চিন্তা করি এখন।এখন তো অনেক পত্রিকা আর অনলাইন। কোনো পত্রিকায় খবর এলো, সেই খবর এখন নেওয়া কঠিন কাজ। কেউ যখন দেখে বলে বা ইনবক্সে আসে, তখন জানতে পারি। কিন্তু ‘ইত্তেফাক’-এর সঙ্গে অভিজ্ঞতাটা ভিন্ন। এখন পর্যন্ত আমি ‘ইত্তেফাক’-এর ‘বিনোদন প্রতিদিন’-এর নিয়মিত পাঠক। যদিও এখন সব অনলাইন হয়ে যাওয়ায় পত্রিকাটাও অনলাইনেই বেশি সময় পড়া হয়। ৬৭ বছরে পা দিল পত্রিকাটি। শুধু দেশের নয়, পুরো বিশ্বের ইতিহাসে এটি উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়। অনেক শুভ কামনা ও ভালোবাসা প্রিয় ‘ইত্তেফাক’কে। সময়ের সঙ্গে আরো তরুণ হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এভাবেই এগিয়ে যাক আরো অনেক বছর। শততম বর্ষ পেরিয়ে আরো উজ্জীবিত হোক ‘ইত্তেফাক’।

আজন্ম ভালোবাসা ‘ইত্তেফাক’

হাবিব ওয়াহিদ:আমার বাবার চোখে উচ্ছ্বাস দেখতাম ‘ইত্তেফাক’-এ প্রকাশিত যেকোনো খবরে। হঠাত্ করে কোনো কিছু ক্রস চেক না করে কিছু ছাপে না দৈনিকটি। এই অভ্যাসটা কম ‘ইত্তেফাক’-এর। সময়ের সঙ্গে এখন পত্রিকার পড়ার অভ্যাসটা বদলেছে। মোবাইলেই সব খবর পাওয়া যায়। তবু নতুন বইয়ের গন্ধের মতো পত্রিকার গন্ধেরও ভালোলাগা থেকেই যাবে। ডিভাইসের যুগে প্রিন্টেড পত্রিকা পড়ার অভ্যাস কমে যাচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয়, কিছু পত্রিকা হাতে ধরে পড়ার নেশাটা আজন্ম রয়েযাবে। তার ভেতরে অন্যতম নাম ‘ইত্তেফাক’। শুভ জন্মদিন।

বাঙালির অভ্যাসের নাম ‘ইত্তেফাক’

নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ:‘ইত্তেফাক’-এ একসময় প্রচুর লিখেছি। এখনো মাঝেমধ্যে লিখি। আমাদের নাট্যচর্চা বা সংস্কৃতিক আন্দোলনের অন্যতম অভিভাবক কিন্তু ‘ইত্তেফাক’। এছাড়া বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের যে আলোচনা প্রকাশ পায়, তা কিন্তু খুবই সুসংগঠিত। সেদিক দিয়ে ‘ইত্তেফাক’কে আমি বলি, আমাদের বাঙালির একটি কালচারের নাম। যে অভ্যাসে আমরা বেড়ে উঠেছি। ৬৬ তম জন্মবার্ষিকীতে এখনো সাবলীল, সমসাময়িক। এটাই ‘ইত্তেফাক’-এর প্রধানতম বৈশিষ্ট্য। ‘ইত্তেফাক’-এর সম্পাদক প্রকাশক থেকে শুরু করে সকলের প্রতি আমার শুভ কামনা। শুভ জন্মদিন।

বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ দিনপঞ্জি হলো ‘ইত্তেফাক’

প্রখ্যাত শিশু সাহিত্যিক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ফরিদুর রেজা সাগর:ইত্তেফাক’কে আমি শুধু একটি পত্রিকা হিসেবে দেখি না। আমি বলি, এটা বাংলাদেশের একটা ডায়েরি। এদেশের পূর্ণাঙ্গ দিনপঞ্জি হলো ‘ইত্তেফাক’। এটি নিয়ে আমার স্মৃতি তো অগণিত। কোনটা রেখে কোনটা বলব!১৯৭১-এর ২৫ মার্চের কালরাত্রির কথা এখনো দগদগে স্মৃতি হয়ে আছে। পত্রিকাটির সঙ্গে আমার সম্পর্ক তাই নানাভাবে। আমি কচি-কাঁচার আসর-এ নিয়মিত লেখা থেকে শুরু করে আহ্বায়ক হিসেবেও কাজ করেছি। তাই এটা আমার নিজের ব্যক্তিগত সত্তার একটি অংশ। আমাদের সেই সৃজনশীল সময়গুলো কেটেছে ‘ইত্তেফাক’-এর সঙ্গে। তাই আমার নিজের পরিবার মনে করি‘ইত্তেফাক’কে।এছাড়া তাত্ক্ষণিক স্মৃতি হিসেবে আরো একটি কথা বলতে পারি, তা হলো ‘ইত্তেফাক’-এ বিটিভিতে প্রচারিত ছোটদের অনুষ্ঠানের রিভিউ প্রথম আমার হাত দিয়েই শুরু হয়। একটানা দীর্ঘদিন আমি লিখেছি। এছাড়া শিশুতোষ লেখা, গল্প, কবিতা ফিচারসহ অগণিত শব্দে ‘ইত্তেফাক’-এর শরীরে আমার স্মৃতিচিহ্ন রয়েছে। সেই থেকে আজো ‘ইত্তেফাক’ আমার কাছে এক পরম ভালোবাসার নাম। ভালো থাকুক এদেশের অন্যতম নির্ভরতার দৈনিকটি। শুভ জন্মদিন। শুভ কামনা।

ভালোবাসা দৈনিক ‘ইত্তেফাক’-এর প্রতি

কণ্ঠশিল্পী তপন চৌধুরী:

একসময় দৈনিক পত্রিকা মানেই ‘ইত্তেফাক’কেই বুঝতাম। তাই এখনো অন্যসব পত্রিকা পড়লেও ‘ইত্তেফাক’টা চেক করি। দেখা হয়। আমার মনে হয়, এই অভ্যাসটা অনেকেরই। আমার ক্যারিয়ারের অগণিত ছবি, খবর ছাপা হয়েছে ‘ইত্তেফাক’-এ। সেই অর্থে কয়েক প্রজন্মের বিনোদন সাংবাদিকদের সঙ্গেও পরিচয় বা সখ্যতার গল্প। ইত্তেফাক একটি দৈনিকের চেয়েও বেশি কিছু। ভালোবাসা রইল। শুভ জন্মদিন।

প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৪ ডিসেম্বর ২০১৯/ইকবাল

Share Button

     এ জাতীয় আরো খবর